Baby’s sleep: শিশুর ঘুমের পর সকালে সঠিক অভ্যাস গড়ে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজকাল অনেক শিশুই সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বিছানা ছাড়তে চাই না, বা মোবাইলের দিকে চোখ রাখে। তবে, যদি শিশুকে ভোরে উঠে একটি নির্দিষ্ট রুটিনে অভ্যস্ত করা যায়, তবে তার মেধার বিকাশ আরও তুখোড় হবে। বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, ভোরে উঠে পড়াশোনা করতে বসলে মস্তিষ্ক অধিক সক্রিয় থাকে এবং পড়া বেশি মনে থাকে। এই প্রবন্ধে আমরা আলোচনা করব কীভাবে শিশুকে সকালে সঠিক অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করা যেতে পারে।
১. রাতের ঘুমের গুরুত্ব (Baby’s sleep)
একটি শিশুর সকালে তাড়াতাড়ি ওঠার অন্যতম প্রধান কারণ হল রাতে সময়মতো ঘুমানো। রাত জেগে মোবাইল দেখা বা টিভি দেখা ঘুমের গুণমান কমিয়ে দেয়। শিশুকে যদি নিয়মিত সময়ে ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তোলা যায়, তবে সকালে উঠতে কোনো সমস্যা হবে না। রাতের ঘুম পূর্ণাঙ্গ হলে সকালে উঠতেও কোনো অসুবিধা হবে না।
২. গোল্ডেন আওয়ারের গুরুত্ব
ভোরে ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথম এক ঘণ্টাকে বলা হয় ‘গোল্ডেন আওয়ার’। এই সময়টি শিশুর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মস্তিষ্ক সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে এবং শরীরের পক্ষে সবচেয়ে উপকারী অভ্যাসগুলি গড়ে তোলার জন্য আদর্শ সময়। তাই, এই সময়ে শিশুকে কিছু সঠিক অভ্যাসে অভ্যস্ত করানো উচিত।
৩. শরীরচর্চা
প্রথমেই শিশুকে সকালে উঠেই কিছু শরীরচর্চা করানো উচিত। যেমন স্ট্রেচিং, জগিং বা প্রাণায়াম। এই শরীরচর্চা মস্তিষ্কের কার্যক্রম বাড়ায় এবং শিশুকে সারা দিন চনমনে রাখতে সাহায্য করে। যোগাসনও একটি ভালো বিকল্প, যা শিশুর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উভয়কেই উন্নত করে।
৪. জল খাওয়া
ঘুম ভাঙার পর একটি গ্লাস জল খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উষ্ণ গরম জল হলে আরও ভালো। জল শরীরকে আর্দ্র রাখে এবং সকালে শরীরের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমকে সক্রিয় করে তোলে। জল শরীরের ডিটক্সিফিকেশনও ঘটায়, যা পুরোদিন সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।
৫. সূর্যালোক
ভোরবেলা কিছু সময়ের জন্য শিশুকে সূর্যের আলোতে বসানো উচিত। সকালের হালকা রোদ ভিটামিন ডি সংশ্লেষে সহায়তা করে, যা শিশুদের বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য। সূর্যালোক শরীরের ক্লান্তি দূর করে এবং মনকে সতেজ রাখে।
৬. পুষ্টিকর প্রাতরাশ
সকালে শিশুকে একটি পুষ্টিকর প্রাতরাশ দিতে হবে। মাখন পাউরুটি, দুধ দিয়ে কর্নফ্লেক্স বা দুধ-ওট্স শিশুর পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে। প্রাতরাশে ছোট ছোট ফল কেটে দেওয়া হলে শিশুর পেট দীর্ঘসময় ভর্তি থাকবে। চাল-ডাল দিয়ে খিচুড়ি বা ওট্স, ডালিয়া পুষ্টিকর খাবার হিসেবে বেশ ভালো।
৭. মেডিটেশন বা ধ্যান
ধীরে ধীরে শিশুকে ধ্যান বা মেডিটেশনের অভ্যাস করানো উচিত। প্রথমে এটি কঠিন হতে পারে, কিন্তু ধীরে ধীরে শিশুর মনোযোগ এবং একাগ্রতা বাড়িয়ে তুলবে। প্রতিদিন ১০-১৫ মিনিট ধ্যানে বসা শিশুর মেধার বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করবে এবং পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়াবে।
৮. ঘরের কাজ
ঘরের ছোট ছোট কাজ শিশুকে দায়িত্বশীল করে তুলতে সাহায্য করে। যেমন, বিছানা গুছানো, পড়ার টেবিল সাজানো, গাছে জল দেওয়া—এই ছোট ছোট কাজগুলির মধ্যে দিয়ে শিশুর দায়িত্ববোধ গড়ে তোলা যায়। এই অভ্যাসগুলি শিশুকে নিয়মিত পড়াশোনা এবং দায়িত্বশীল করে তোলে।
শিশুর সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরের এক ঘণ্টাকে ‘গোল্ডেন আওয়ার’ হিসেবে গড়ে তুললে তার মেধার বিকাশ হবে এবং শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। নিয়মিত শরীরচর্চা, জল খাওয়া, সূর্যালোক গ্রহণ, পুষ্টিকর প্রাতরাশ, মেডিটেশন, এবং ঘরের কাজের অভ্যাস শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই অভ্যাসগুলি শিশুকে সুস্থ, সক্রিয় ও বুদ্ধিমত্তায় সমৃদ্ধ করবে।
[…] আরও পড়ুন: শিশুর ঘুমের পরে সঠিক অভ্যাস গড়ে তুলুন,… […]