Positive বার্তা (বাংলা)

A teamwork initiative of Enthusiastic people using Social Media Platforms

Homeব্লগশরীরচর্চা নয়, খাদ্যাভ্যাসের বদলই আসল মন্ত্র! ওজন ঝরিয়ে রোগা হতে গেলে কী...

শরীরচর্চা নয়, খাদ্যাভ্যাসের বদলই আসল মন্ত্র! ওজন ঝরিয়ে রোগা হতে গেলে কী করবেন?

The Real Key to Weight Loss: ওজন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য অনেকেই হঠাৎ করে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেন। কেউ বা সামান্য অবসর পেলেই জিমে গিয়ে কঠোর পরিশ্রম করেন। কিন্তু তার পরেও অনেকেরই অভিযোগ, “আমার ওজন তো কমছেই না!” জীবনের গতি যত বাড়ছে, কাজের চাপও তত বাড়ছে। আর কাজের পরিমাণ বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই কমে যাচ্ছে হাঁটাচলার সুযোগ। বিশেষত যাঁদের কাজ শারীরিক শ্রমনির্ভর নয়, তাঁদের জীবনযাপন আরও বেশি স্থবির হয়ে পড়ছে। এর ফলস্বরূপ শরীরে বাড়ছে অতিরিক্ত মেদ এবং ওজন। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই কঠোর ডায়েট বা শরীরচর্চার শরণাপন্ন হন। তবে আশ্চর্যজনকভাবে, ফিটনেস বিশেষজ্ঞরা এখন অন্য কথাই বলছেন।

যখন চারপাশে ওজন কমানোর নিত্যনতুন পদ্ধতি আবিষ্কৃত হচ্ছে, তখন ‘ফ্রিডম ফ্রম ডায়াবিটিস অ্যান্ড ওবেসিটি’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং চিকিৎসক মালহার গানলার একটি নতুন তত্ত্ব সামনে এনেছেন। তাঁর বক্তব্য, “আপনি যদি সত্যিই ওজন কমাতে চান, তাহলে শরীরচর্চা করা বন্ধ করুন।” সম্প্রতি তাঁর এই মন্তব্য চারিদিকে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এতদিনের প্রচলিত ধারণার বিপরীতে কেন দাঁড়াচ্ছেন মালহার? এই প্রশ্নের উত্তরে ট্রায়াথেলনের প্রশিক্ষক জানান, “জিমে হোক বা আশেপাশে, প্রতিদিন এমন বহু মানুষের সঙ্গে আমার দেখা হয়, যাঁরা ওজন কমানোর জন্য কঠোর পরিশ্রম করেন। কিন্তু ছয় মাস পর যখন তাঁদের সঙ্গে দেখা হয়, তাঁরা বলেন যে এক গ্রামও ওজন কমেনি! এর প্রধান কারণ হল, ওজন কমাতে শরীরচর্চা বা ব্যায়ামের ভূমিকা খুবই কম।”

ওজন ঝরিয়ে রোগা হতে গেলে কী করবেন?

মালহার আরও জানান যে তিনি প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার রোগীর চিকিৎসা করেছেন। তাঁদের মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ রোগী কেবল শরীরচর্চার মাধ্যমে ওজন কমাতে সক্ষম হয়েছেন। তবে বেশিরভাগ রোগীই (যাদের ওজন ৮০-১০০ কিলোগ্রামের মধ্যে) এই পদ্ধতিতে তেমন কোনো ফল পাননি। কারণ তাঁদের প্রধান সমস্যার মূলে রয়েছে ভুল খাদ্যাভ্যাস।

ভুল খাদ্যাভাসের কারণে শরীরের পেশিতে অতিরিক্ত মেদ জমতে থাকে। আর অনেকেই মনে করেন যে শরীরচর্চা করলেই সেই মেদ সহজেই ঝরে যাবে। কিন্তু শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া তেমনভাবে কাজ করে না। তাই মালহারের স্পষ্ট বক্তব্য, খাদ্যাভ্যাসকে নিয়ন্ত্রণে না আনলে ওজন কমানো সম্ভব নয়।

চিকিৎসকের মতে, ওজন কমানোর আসল চাবিকাঠি হল সঠিক খাদ্যাভ্যাসের দিকে মনোযোগ দেওয়া। যে খাবারগুলো ওজন কমাতে বাধা দেয়, সেগুলোকে প্রথমত তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। পাশাপাশি, মেদ ঝরাতে সাহায্যকারী খাবারগুলোকে খাদ্যতালিকায় যোগ করতে হবে। তাঁর দাবি, একবার যদি সুষম আহারের ভিত্তি তৈরি হয়ে যায়, তাহলে ছয় মাসের মধ্যেই ১০-১৫ কিলোগ্রাম ওজন কমানো সম্ভব।

মালহারের বক্তব্য অনুযায়ী, প্রথম ধাপে যদি কেউ সফল হন, তাহলে ব্যায়াম ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অনুঘটকের কাজ করে। তবে শুরুতেই কঠোর পরিশ্রম করা উচিত নয়। ধীরে ধীরে ছোট ছোট পদক্ষেপের মাধ্যমে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, প্রথমে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করার অভ্যাস তৈরি করা যেতে পারে। এরপর হালকা যোগাসন করা ভালো। নিয়ম মেনে এই দুটি ধাপ অতিক্রম করার পর অল্প পরিমাণে শক্তি বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ নেওয়া যেতে পারে।

তিন ধাপে শরীরচর্চার মূল উদ্দেশ্য হল পেশিগুলোকে উদ্দীপিত করা। প্রথমে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, তারপর ওজন হ্রাস এবং সবশেষে ধীরে ধীরে শক্তি বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ।

খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের ক্ষেত্রেও চিকিৎসক কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়েছেন।

১. যে ব্যক্তি সাধারণত দিনে তিনবার বড় খাবার খান, তাঁকে প্রথমে তিন থেকে দুইবারে এবং পরবর্তীতে দুই থেকে একবার খাবারে অভ্যস্ত হতে হবে।

২. ওজন কমানোর ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করতে পারে এমন খাবারগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।

৩. ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে এমন খাবার খাদ্যতালিকায় যোগ করতে হবে।

৪. পেশিকে সক্রিয় রাখার জন্য হালকা শরীরচর্চা করতে হবে, অতিরিক্ত কঠোর পরিশ্রম নয়।

সুতরাং, ওজন কমানোর জন্য জিমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘাম ঝরানোর চেয়ে অনেক বেশি জরুরি হল নিজের খাদ্যতালিকার দিকে নজর দেওয়া। সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং একটি সুশৃঙ্খল জীবনযাপনই ওজন কমানোর আসল মন্ত্র, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আরও পড়ুন: বাঁকুড়ার কেন্দুয়াডিহি নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়, যেখানে স্বপ্ন বোনা হয়

Join Our WhatsApp Group For New Update
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

সবচেয়ে জনপ্রিয়