Positive বার্তা (বাংলা)

A teamwork initiative of Enthusiastic people using Social Media Platforms

Homeস্বাস্থ্যসারকোপেনিয়া: বার্ধক্যে পেশী শক্তির ক্ষয় এবং তার প্রভাব

সারকোপেনিয়া: বার্ধক্যে পেশী শক্তির ক্ষয় এবং তার প্রভাব

  Sarcopenia: বার্ধক্য আমাদের জীবনের একটি অবশ্যম্ভাবী অংশ, কিন্তু বয়সের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শরীরের বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটে। এসব পরিবর্তনের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি সমস্যা হলো সারকোপেনিয়া, যা পেশীর দুর্বলতা বা শক্তির হ্রাসকে বোঝায়। এই সমস্যা সাধারণত বয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, বিশেষ করে যারা শারীরিকভাবে অতি সক্রিয় নন বা বসে থাকেন। কিন্তু, সঠিক তথ্য ও সচেতনতার অভাবে সারকোপেনিয়া ডায়াবেটিস টাইপ-২-এর মতো আরও বড় সমস্যার দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (AIIMS) একটি গবেষণায় এই বিষয়টি তুলে ধরেছে।

সারকোপেনিয়া কী?

সারকোপেনিয়া একটি শারীরিক অবস্থা যেখানে পেশীর শক্তি, ভর এবং কর্মক্ষমতা সময়ের সঙ্গে কমে যায়। সাধারণত বয়স্ক মানুষের মধ্যে এটি বেশি দেখা যায়, যাদের পেশী শক্তি কমে গিয়ে জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটে। এর ফলে, তাদের দৈনন্দিন কাজকর্ম, হাঁটাচলা, ওঠানামা, এমনকি ব্যায়ামও কঠিন হয়ে পড়ে। এটি কেবল পেশীর দুর্বলতা সৃষ্টি করে না, বরং জীবনের মানকে অনেকটা প্রভাবিত করে।

(Sarcopenia) সারকোপেনিয়ার কারণ

সারকোপেনিয়ার পেছনে মূল কারণ হলো পেশীর দুর্বলতা, যা বয়সের সঙ্গে বেড়ে যায়। কিছু অন্যান্য কারণও রয়েছে, যেমন—অসক্রিয়তা, সঠিক পুষ্টির অভাব, বা অন্যান্য রোগের প্রভাব। যখন একজন মানুষ ক্রমাগত শুয়ে থাকে বা কম চলাফেরা করে, তখন পেশী দুর্বল হতে শুরু করে। এর ফলস্বরূপ, মানুষ শরীরের নির্দিষ্ট অংশের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে না এবং সহজেই শারীরিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। বিশেষত, পায়ের পেশী দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হয়, কারণ পা আমাদের দেহের একটি বড় অংশ এবং এর মাধ্যমে শারীরিক শক্তি এবং কার্যকলাপ পরিচালিত হয়।

সারকোপেনিয়ার প্রভাব (Sarcopenia)

সবচেয়ে বিপজ্জনক দিক হলো, এটি শরীরের অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, সারকোপেনিয়া অস্টিওপোরোসিসের তুলনায় বেশি বিপজ্জনক হতে পারে। অস্টিওপোরোসিসের ক্ষেত্রে যেখানে পা ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, সারকোপেনিয়ায় পেশীর দুর্বলতা এবং অপর্যাপ্ত শক্তির কারণে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। এর ফলে ডায়াবেটিস টাইপ-২ বা অন্য রোগের ঝুঁকি বাড়ে। তাই, বার্ধক্যের শুরুর দিকে পেশী শক্তি ঠিক রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পেশী শক্তি বজায় রাখার কিছু কার্যকরী উপায়

  1. দাঁড়ানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন
    যতটা সম্ভব বসে থাকার থেকে দাঁড়িয়ে থাকার অভ্যাস গড়ে তুলুন। যেকোনো শারীরিক কার্যকলাপের জন্য দাঁড়ানো এবং হাঁটাচলা করতে হবে, যাতে পেশী শক্তিশালী থাকে।

  2. বিশ্রামের মাত্রা কমান
    যদি একজন মধ্যবয়স্ক ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি হন, তবে তাকে বেশি বিশ্রাম নিতে বলবেন না। গবেষণায় দেখা গেছে যে, এক সপ্তাহ শুয়ে থাকলে পেশীর ভর ৫% কমে যেতে পারে, এবং তা কখনই পুনরুদ্ধার করা যায় না। তাই, বিছানা থেকে উঠিয়ে হালকা হাঁটাচলা করানো প্রয়োজন।

  3. সারকোপেনিয়া ও অস্টিওপোরোসিসের তুলনা
    অস্টিওপোরোসিস থেকে সুরক্ষা পাওয়ার জন্য সতর্ক থাকতে হয় যাতে কেউ পড়ে না যায়, কিন্তু সারকোপেনিয়া শুধুমাত্র হাড়ের সমস্যা নয়, এটি জীবনযাত্রার মানের উপরও প্রভাব ফেলে। এই কারণে পেশীর উন্নতি এবং শক্তি বজায় রাখা আরও গুরুত্বপূর্ণ।

  4. পায়ের পেশীর যত্ন নিন
    পায়ের পেশী সবচেয়ে দ্রুত দুর্বল হয়ে পড়ে। পা না নড়ানো বা কম নড়াচড়া করার ফলে পায়ের পেশী দুর্বল হতে থাকে। এজন্য সিঁড়ি বেয়ে ওঠা, সাইকেল চালানো বা হালকা দৌড়ানো খুবই কার্যকর ব্যায়াম।

  5. প্রতিদিন হাঁটুন
    বার্ধক্যে শরীরের পেশী ঠিক রাখতে হলে নিয়মিত হাঁটতে হবে। বিশেষ করে, ৭০ বছর বয়সের পরও পায়ের ব্যায়াম চালিয়ে যেতে হবে। সঠিকভাবে হাঁটার মাধ্যমে পেশীর শক্তি বজায় থাকবে, এবং মানুষের মোট স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।

আরও পড়ুন: ভান্তারা: প্রাণীকূলের স্বর্গরাজ্য, মানবতার অনন্য নিদর্শন

Join Our WhatsApp Group For New Update
RELATED ARTICLES

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

সবচেয়ে জনপ্রিয়