‘Book Gram’: আলিপুরদুয়ারের পানিঝোরায় জন্ম নিল বাংলার প্রথম ‘বইগ্রাম’।আদিবাসী গ্রামে শিক্ষার আলো ছড়াবে ‘আলোকবর্তিকা’ গ্রন্থাগার।
মহারাষ্ট্রের ভিলার ও কেরলের পেরুকালেমের পর পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ার জেলার পানিঝোরা গ্রামে বাংলার প্রথম ‘বইগ্রাম’ গড়ে উঠল। ‘আপনকথা’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে এই অসাধারণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ভেতরে অবস্থিত এই ছোট্ট গ্রামে সাতটি আদিবাসী সম্প্রদায় ও অনগ্রসর শ্রেণির মানুষদের বসবাস। এই গ্রামের ছোট থেকে বড় সকলের মধ্যে পড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়াতে এবং শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে এই বইগ্রাম গড়ে তোলা হয়েছে। আগামী দিনে এই গ্রামটি পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই ছোট গ্রন্থাগার (‘Book Gram’):
আলিপুরদুয়ার শহর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পানিঝোরা গ্রামে ঢুকলেই চোখে পড়বে একটি কাঠের তৈরি তোরণ। এই তোরণের মধ্য দিয়ে গ্রামে প্রবেশ করলেই বইগ্রামের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে বানানো একটি ফলক চোখে পড়বে। গ্রামের ভেতরে ১০টি বাড়ির সামনে ‘আলোকবর্তিকা’ নামে ছোট ছোট কাঠের তৈরি গ্রন্থাগার তৈরি করা হয়েছে। এই গ্রন্থাগারগুলিতে গল্পের বই, বিজ্ঞানের বই, সামাজিক সচেতনতামূলক বই সহ নানা স্বাদের ৫০টি করে বই রাখা হয়েছে।
আপনকথার উদ্যোগ:
আপনকথা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার পার্থ সাহা জানিয়েছেন, প্রত্যন্ত এই গ্রামে ছেলেমেয়েরা অনেক সংগ্রাম করে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে। অনেকে পরিবারের আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে কোভিডের পর পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছে। এই ছেলেমেয়েদের শিক্ষার প্রতি টানের কথা জানতে পেরেই তাঁরা এই উদ্যোগ নিয়েছেন। গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে ছোট গ্রন্থাগার তৈরির সংকল্প নিয়ে তারা কাজ করছেন।
কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার:
গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার তৈরি করা হচ্ছে। এখানে চাকরিপ্রার্থীদের বইও থাকবে। ইচ্ছে করলেই গ্রামের মানুষজন এবং পর্যটকরা সেখানে গিয়ে পড়াশোনা করতে পারবেন।
পানিঝোরার বইগ্রাম শুধুমাত্র একটি গ্রামের কাছেই নয়, সমগ্র দেশের জন্য একটি অনুপ্রেরণা। এই উদ্যোগ সাক্ষ্য দেয় যে সামান্য প্রচেষ্টায়ও একটি গ্রামের মুখের চেহারা বদলে দেওয়া সম্ভব।
আরো পড়ুন: বেগুন: গুণের খনি, কিন্তু সবার জন্য নয়!