পুষ্টির প্রধান উৎস (Benefits of Eating Eggs)
১. প্রোটিন
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দৈনিক প্রোটিনের প্রয়োজন শরীরের ওজনের ওপর নির্ভর করে। প্রতি কিলোগ্রাম ওজনের জন্য ০.৮ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ, যদি একজনের ওজন ৭৫ কেজি হয়, তাহলে তার ৬০ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন। একটি ডিমে ৬ গ্রাম প্রোটিন থাকে, তাই প্রতিদিন দুইটি ডিম খেলে ১২ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়, যা দৈনিক প্রয়োজনের অনেকটাই পূরণ করে।
২. ভিটামিন এ
দুইটি সিদ্ধ ডিমে ৫৪০ আইইউ ভিটামিন এ থাকে, যা চোখ এবং ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়ক। এছাড়া, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে। একজন প্রাপ্তবয়স্কের প্রতিদিন ৩০০০ আইইউ ভিটামিন এ প্রয়োজন। ডিম এই চাহিদার অনেকটাই পূরণ করে।
৩. ভিটামিন ডি
ভিটামিন ডি হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকেও বৃদ্ধি করে। দৈনিক ৬০০ আইইউ ভিটামিন ডি প্রয়োজন, যেখানে দুইটি ডিমে থাকে ৮২ আইইউ।
৪. ভিটামিন বি ১২
মস্তিষ্কের কার্যক্রমে সাহায্য করে ভিটামিন বি ১২। এটি স্নায়ুর কার্যক্রম এবং রক্তে লোহিতকণিকা বৃদ্ধির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত একজন প্রাপ্তবয়স্কের দৈনিক ২ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন বি ১২ প্রয়োজন, যা দুইটি সিদ্ধ ডিমে ১.৬ মাইক্রোগ্রাম পাওয়া যায়।
৫. ভিটামিন বি ২
ফ্যাট, প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেটের পরিপাকের জন্য প্রয়োজনীয় এই ভিটামিন। ত্বক ও চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দৈনিক ১.৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি ২ প্রয়োজন, যেখানে ডিমে ০.৬ মিলিগ্রাম থাকে।
৬. ফোলেট
ডিএনএ সংশ্লেষ এবং ক্ষতিগ্রস্ত ডিএনএ-র মেরামতিতে সাহায্য করে ফোলেট। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৪০০ মাইক্রোগ্রাম ফোলেট প্রয়োজন। প্রতিটি ডিমে ২৪ মাইক্রোগ্রাম ফোলেট থাকে।
৭. স্যালেনিয়াম
এটি একটি জরুরি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যা কোষের স্বাস্থ্য এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ৫৫ মাইক্রোগ্রাম স্যালেনিয়ামের প্রয়োজনের মধ্যে ২৮ মাইক্রোগ্রাম জোগান দেয় দুইটি সিদ্ধ ডিম।
৮. কোলাইন
দুইটি ডিমে ২৯৪ মিলিগ্রাম কোলাইন থাকে, যা দৈনিক প্রয়োজনের অর্ধেক। কোলাইন মস্তিষ্ক এবং লিভারের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
৯. আয়রন
হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সহায়ক আয়রন। দুইটি সিদ্ধ ডিমে ১.২ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে, যা শরীরের জন্য অপরিহার্য।
১০. জিঙ্ক
দুইটি সিদ্ধ ডিমে ১.১ মিলিগ্রাম জিঙ্ক থাকে। জিঙ্ক শরীরের ক্ষত নিরাময়ে সহায়ক এবং কোষের ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে। একজন প্রাপ্তবয়স্কের জন্য প্রতিদিন ১১ মিলিগ্রাম জিঙ্ক প্রয়োজন।
প্রতিদিন ডিম খাওয়ার সুবিধাগুলি সুস্পষ্ট। এটি আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে। তবে, প্রতিটি ব্যক্তির শরীরের প্রয়োজনীয়তা আলাদা, তাই ডিম খাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া উচিত। নিঃসন্দেহে, একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার জন্য সঠিক পুষ্টির গুরুত্ব অপরিসীম।
আরো পড়ুন: বলুনতো পৃথিবীতে কার হার্ট সব থেকে বড় ? ওজন ও আকার জানলে চমকে যাবেন