Tips to Manage: শীতকাল অনেক শিশুর জন্য অ্যালার্জি, সর্দি, কাশি এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে আসে। তাপমাত্রা কমার সাথে সাথে শ্বাসনালিতে মিউকাস জমার কারণে সর্দি, গলা বসে যাওয়া, এমনকি চোখ জ্বালা বা কনজাঙ্কটিভাইটিসের মতো সমস্যাও দেখা যায়। শিশুদের এই শীতকালীন অ্যালার্জি থেকে সুস্থ রাখতে কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি।
শীতকালীন অ্যালার্জির কারণ ও উপসর্গ
শীতের সময় শিশুদের মধ্যে মূলত শ্বাসনালী (Respiratory Tract) এবং ত্বকে (Skin) অ্যালার্জির প্রকোপ বাড়ে।
ঘরের ভেতরের অ্যালার্জেন: সারা বছর জমা ধুলো, পোশাকের লোম, বা বিশেষ কিছু খাবার অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। পোষা প্রাণীর লোম থেকেও অ্যালার্জি ছড়ায়।
বাইরের অ্যালার্জেন: বাতাসে ভাসমান ফুলের রেণু বা ধূলিকণা অ্যালার্জির ঝুঁকি বাড়ায়। যদি শিশুর আগে থেকেই অ্যালার্জিক রাইনাইটিস থাকে, তবে শীতকালে তা আরও বেড়ে যেতে পারে।
উপসর্গ:
হে ফিভার: ক্রমাগত হাঁচি, সর্দি-জ্বর, এবং হালকা শ্বাসের সমস্যা।
ত্বকের সমস্যা: সারা গায়ে র্যাশ বা চুলকানি।
চোখের সমস্যা: চোখ জ্বালা বা কনজাঙ্কটিভাইটিস।
চিকিৎসক পরামর্শ: অনেকের ধারণা শুধু ত্বকে র্যাশ বার হওয়া মানেই অ্যালার্জি। কিন্তু সর্দি-জ্বর, ক্রমাগত হাঁচি, বা হালকা শ্বাসকষ্টও অ্যালার্জির নানা উপসর্গ হতে পারে।
শিশুকে সুস্থ রাখার উপায়
শীতকালীন অ্যালার্জি এবং শ্বাসকষ্ট থেকে শিশুকে রক্ষা করতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে:
পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ
ঠান্ডা এড়িয়ে চলুন: ঠান্ডা লাগা থেকে শিশুকে রক্ষা করুন। শীতকালে পাখা বন্ধ রাখুন বা গতি কমিয়ে দিন। কোনোভাবেই এসি চালানো যাবে না।
ধূমপান নিষিদ্ধ: শিশু যে ঘরে থাকে, সেখানে বা তার আশেপাশে ধূমপান করবেন না। সিগারেটের ধোঁয়া শিশুদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা বহু গুণে বাড়িয়ে দেয়।
পরিষ্কার বাতাস: শিশুর অ্যালার্জির প্রবণতা বেশি থাকলে ঘরে হেপা ফিল্টারযুক্ত এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন। এটি ধূলিকণা এবং অ্যালার্জেন দূর করে বাতাসকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
সঠিক খাদ্য ও পানীয়
ভিটামিন সি: শিশুকে ভিটামিন সি যুক্ত ফল এবং মরসুমি সব্জি বেশি করে খাওয়ান।
জাঙ্ক ফুড বর্জন: জাঙ্ক ফুড বা অতিরিক্ত তেলমশলার খাবার খাদ্যের তালিকা থেকে বাদ দিন।
আয়ুর্বেদিক উপাদান: সর্দি-কাশির প্রকোপ কমাতে সকালে ঈষদুষ্ণ জলে মধু মিশিয়ে খাওয়ান।
ঔষধি জল: দারচিনি, ছোট এলাচ, আদা, এবং লবঙ্গ ফুটিয়ে সেই জল ছেঁকে শিশুকে খাওয়ালে উপকার পাবেন।
মশলার ব্যবহার: খাবারে আদা, গোলমরিচ, এবং হলুদের মতো মশলার ব্যবহার বাড়ান।
জল: ছোট থেকেই শিশুকে বেশি করে জল খাওয়ার অভ্যাস করান। এটি শ্লেষ্মা পাতলা রাখতে সাহায্য করে।
জীবনযাত্রায় পরিবর্তন
ইনহেলার ব্যবহার: শিশুর হাঁপানি (Asthma) বা অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের সমস্যা থাকলে, চিকিৎসকের নির্দেশ মেনে ইনহেলার অবশ্যই কাছে রাখুন এবং সময়মতো ব্যবহার করুন।
মাস্ক: শিশুর শ্বাসকষ্ট বা ধুলো থেকে অ্যালার্জি থাকলে রাস্তায় বেরোনোর সময় অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করান।
জরুরী সতর্কতা: যদি আপনার শিশুর হাঁচি-কাশি, শ্বাসকষ্ট বা অন্য কোনো অ্যালার্জির উপসর্গ শুরু হওয়ার পরেও না কমে, তবে সময় নষ্ট না করে অবিলম্বে একজন শিশুরোগ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
আরও পড়ুন: বাঁকুড়ার দুই কন্যার ঐতিহাসিক জয়: দু’চাকায় উমলিঙ লা গিরিপথ জয় করে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে নাম





