Santiniketan: পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্যচিত্রে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে চলেছে শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। এই প্রকল্পটি শুধুমাত্র একটি চিকিৎসালয় নয়, বরং মানবিকতা ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মিশেলে এক নতুন স্বাস্থ্যসেবা মডেলের পথিকৃৎ। এই স্বপ্নের কান্ডারি হলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী ও এই হাসপাতালের কর্ণধার ডঃ মলয় পিট, যাঁর দূরদর্শী পরিকল্পনা রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় নতুন অধ্যায়ের সূচনা করছে।
ডঃ মলয় পিটের ভাবনা কেবল রোগের চিকিৎসায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং রোগী এবং তাঁদের পরিজনদের প্রতি সহানুভূতিশীল ও সামগ্রিক পরিচর্যায় জোর দেয়। তাঁর কথায়, “শুধু চিকিৎসা নয়, রোগীকে পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে দেখা, তার দুশ্চিন্তা কমানো, এবং তাকে ভালো রাখতে মানসিক সমর্থন দেওয়াটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমরা চাই, রাজ্যের মানুষ এখানে ভরসা নিয়ে আসুন এবং সুস্থ হয়ে ফিরে যান।” এই উক্তি থেকেই স্পষ্ট, এখানে চিকিৎসার পাশাপাশি মানসিক স্বস্তির ওপরও সমান গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
কী থাকছে শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে?
শান্তিনিকেতনের এই নতুন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে থাকছে আন্তর্জাতিক মানের সুবিধা:
আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম: বিশ্বের সেরা প্রযুক্তিনির্ভর যন্ত্রপাতির সাহায্যে জটিল রোগের নির্ভুল নির্ণয় ও চিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে।
২৪x৭ জরুরি পরিষেবা: যেকোনো আকস্মিক বা জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকবে অভিজ্ঞ চিকিৎসক ও নার্সদের বিশেষ দল।
বিশ্বমানের ওয়ার্ড ও আইসিইউ: রোগীদের স্বাচ্ছন্দ্য এবং দ্রুত আরোগ্য নিশ্চিত করতে অত্যাধুনিক এবং পরিচ্ছন্ন ওয়ার্ড ও নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (ICU) তৈরি করা হয়েছে।
পরিজনদের জন্য বিশেষ সুবিধা: রোগীর পরিবারের মানসিক চাপ কমাতে এবং তাঁদের পাশে থাকতে থাকছে বিশেষ পরামর্শ কেন্দ্র ও আরামদায়ক বিশ্রামাগার।
সাশ্রয়ী ও বিনামূল্যে চিকিৎসা: দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত মানুষের কথা মাথায় রেখে কম খরচে চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকছে, এবং কিছু ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিখরচায় পরিষেবাও দেওয়া হবে, যা সমাজের সব স্তরের মানুষের কাছে চিকিৎসা সহজলভ্য করবে।
শুধু চিকিৎসা নয়, শিক্ষাক্ষেত্রেও নতুন দিগন্ত
শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল শুধু একটি চিকিৎসা কেন্দ্র নয়, এটি একটি পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবেও গড়ে উঠছে। এখানে এমবিবিএস কোর্সের পাশাপাশি বিভিন্ন প্যারামেডিকেল কোর্স চালু হবে, যা রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের জন্য এক সুবর্ণ সুযোগ নিয়ে আসবে। এর ফলে একদিকে যেমন দক্ষ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী তৈরি হবে, তেমনই বীরভূম জেলার বহু মানুষের জন্য কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
স্থানীয় মানুষের দীর্ঘদিনের আশা ছিল, চিকিৎসার জন্য আর কলকাতা বা জেলার বাইরে যেতে হবে না। শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল সেই আশাকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে চলেছে। ডঃ মলয় পিটের এই উদ্যোগ বীরভূমের স্বাস্থ্যসেবার মানকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে এবং এটি কেবল একটি ভবন বা প্রকল্প নয়, বরং মানবিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন পরিচয় হয়ে উঠবে, যেখানে রোগীর সেবা ও সম্মানই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে।
আরও পড়ুন: ৯ বছরের পারিজাতের বিরল কচ্ছপ উদ্ধার: পরিবেশ রক্ষায় এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত