New Rail Route: দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে নতুন দিগন্তের পথে পশ্চিমবঙ্গ। বহু আকাঙ্ক্ষিত তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেল প্রকল্প নিয়ে এল এক দারুণ সুখবর। এতদিন ধরে যে কাজ থমকে ছিল, বিশেষ করে ভাবাদিঘির জট এবং আটকে থাকা ৬০০ মিটারের অংশ, তা কাটিয়ে রেলওয়ে পুরোদমে কাজ শুরু করেছে। এর ফলে হাওড়া, হুগলি ও বাঁকুড়া এক সূত্রে গাঁথা পড়বে, যা এই অঞ্চলের মানুষের জন্য বয়ে আনবে এক নতুন সম্ভাবনা।
কিছুদিন আগেই সামাজিক মাধ্যমে ভাবাদিঘিতে রেল সেতুর কাজ শুরুর ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল, যা ছিল আশার আলো। এবার সেই খবরই নিশ্চিত হলো। জানা গেছে, ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের মাধ্যমে সব বাধা দূর করে রেল দফতর ভাবাদিঘিতে রেল সেতুর কাজ শুরু করেছে। তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেল প্রকল্পের মোট ৮২.৪৭ কিলোমিটারের মধ্যে যে ৬০০ মিটারের কাজ এতদিন এগোচ্ছিল না, সেখানেও এখন পুরোদমে কাজ চলছে। এই সংবাদে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে সকলেই।
এই রেল প্রকল্পটি চালু হলে তারকেশ্বর এবং বিষ্ণুপুরের মতো দুটি গুরুত্বপূর্ণ মন্দির নগরীতে যাতায়াত আরও সহজ হবে। সবথেকে বড় কথা, হাওড়ার সঙ্গে এই অঞ্চলের যোগাযোগ আরও নিবিড় হবে, যা সকলের জন্য সুবিধা নিয়ে আসবে। ভাবাদিঘির এই অংশটি ছাড়া গোঘাট ও কামারপুকুর পর্যন্ত রেললাইন পাতার কাজ ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ হয়ে গেছে। তারকেশ্বর থেকে গোঘাট পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করছে, অন্যদিকে বিষ্ণুপুর থেকে জয়রামবাটি পর্যন্ত রেলের সিআরএস (কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি) সম্পন্ন হয়েছে। রেলওয়ে বর্তমানে কামারপুকুর ও জয়রামবাটির মধ্যে রেললাইন পাতার কাজ দ্রুত গতিতে চালাচ্ছে। কামারপুকুর রেল স্টেশনও তৈরি হয়ে গেছে।
এছাড়াও, হাওড়া থেকে বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া পর্যন্ত নতুন MEMU ট্রেন চালু হয়েছে। ফলে একবার এই প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে গেলে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, তারকেশ্বর এবং বিষ্ণুপুরের মধ্যে দূরত্ব অনেকটাই কমে যাবে, যা এই অঞ্চলের অর্থনীতি ও পর্যটনে এক নতুন মাত্রা যোগ করবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভাবাদিঘির স্থানীয় বাসিন্দারা বারবার দিঘি বাঁচিয়ে রেলপথ তৈরির দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টও ভাবাদিঘিকে যতটা সম্ভব রক্ষা করে রেল প্রকল্প এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল। রেলের দাবি ছিল, গোঘাটের ভাবাদিঘির কিছু বাসিন্দার আপত্তিতেই এই প্রকল্পের কাজ থমকে ছিল। তবে, এবার সেই সমস্যা মিটেছে বলে জানানো হচ্ছে। এখন সকলের একটাই প্রত্যাশা, দ্রুত এই রুটে ট্রেন পরিষেবা শুরু হোক এবং এই অঞ্চলের মানুষের স্বপ্ন সত্যি হোক।
[…] […]