Industrial Hub: পশ্চিমবঙ্গের শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুর তার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি মানবিক দায়বদ্ধতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করল। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি যখন হাজার হাজার মানুষকে অসহায় করে তুলেছে, তখন তাদের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এসেছে দুর্গাপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (DCCI)। সংগঠনের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ৫ লক্ষ টাকা আর্থিক অনুদান দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছে।
বিপর্যয়ের মুখে উত্তরবঙ্গ
দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, এবং আলিপুরদুয়ার— উত্তরবঙ্গের এই জেলাগুলোর বিস্তীর্ণ অঞ্চল বর্তমানে প্রকৃতির রোষে বিপর্যস্ত। তিস্তা, তলডু (Toldu) সহ একাধিক নদীর জল বিপদসীমা ছাড়িয়ে যাওয়ায় বহু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। রাস্তাঘাট, সেতু, এবং বিস্তীর্ণ চাষের জমি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে অসংখ্য মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছেন।
দুর্গাপুর চেম্বারের দৃঢ় পদক্ষেপ
এই চরম সংকটের সময়ে, দুর্গাপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি তাদের সামাজিক দায়িত্ব পালনে এগিয়ে এসেছে। বুধবার আসানসোল–দুর্গাপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এডিডিএ)-এর দপ্তরে আয়োজিত এক সাংবাদিক বৈঠকে এই অনুদানের কথা ঘোষণা করা হয়।
চেম্বারের সভাপতি, চন্দন দত্ত, এই প্রসঙ্গে বলেন যে, এই পরিস্থিতিতে সরকারের মাধ্যমে অর্থসাহায্য প্রদান করাই সবচেয়ে দ্রুত ও কার্যকর উপায়, কারণ সরকারের হাত ধরেই ত্রাণ সঠিক সময়ে এবং সঠিক স্থানে পৌঁছাতে পারবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, বন্যা পরিস্থিতি যদি আরও খারাপ হয়, তবে সাহায্যের পরিমাণ বাড়ানোর সম্ভাবনাও চেম্বার কর্তৃপক্ষ উড়িয়ে দিচ্ছে না।
সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রতিফলন
দুর্গাপুর চেম্বারের এই উদ্যোগটি নিছক অর্থনৈতিক সাহায্য নয়; এটি মানবিকতা ও সহমর্মিতার এক শক্তিশালী বার্তা বহন করে। শিল্প ও বাণিজ্য যখন লাভের গণ্ডি পেরিয়ে বৃহত্তর সমাজের প্রতি তার কর্তব্য মনে রাখে, তখনই তা একটি আদর্শ সমাজের ভিত্তি তৈরি করে। সংগঠনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে যে, দুর্যোগের সময়ে একে অপরের পাশে দাঁড়ানোই প্রকৃত সামাজিক দায়িত্ব।
চেম্বার কর্তৃপক্ষ আশা প্রকাশ করেছে যে, তাদের এই মানবিক উদ্যোগ রাজ্যের অন্যান্য শিল্প এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও উত্তরবঙ্গের বিপর্যস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য উদ্বুদ্ধ করবে।
প্রকৃতির তাণ্ডবে যখন রাজ্যের এক অংশ জর্জরিত, তখন শিল্পনগরী দুর্গাপুরের এই সংহতির হাত প্রমাণ করে যে, রাজ্যের মানুষ এখনো এক অটুট বন্ধনে আবদ্ধ, এবং দুর্যোগ যত গভীরই হোক না কেন, মানবিকতার আলো কখনো নিভে যায় না।
 
 

