Durgapur: নিজস্ব সংবাদদাতা, দুর্গাপুর: ৯ই আগস্ট, শনিবার দুর্গাপুর শহর যেন এক নতুন প্রভাতের সাক্ষী থাকল। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে শুধুমাত্র সম্প্রীতির সুতোয় বাঁধা পড়ল শিল্পনগরীর মানুষ। রাখি বন্ধন উৎসবকে কেন্দ্র করে শহরজুড়ে তৈরি হয়েছিল এক অভূতপূর্ব মেলবন্ধন, যেখানে ক্লাব, সামাজিক সংগঠন এবং সাধারণ মানুষের সম্মিলিত উদ্যোগে সৌভ্রাতৃত্বের এক নতুন অধ্যায় রচিত হলো।
এদিন সকাল থেকেই দুর্গাপুরের আকাশ-বাতাসে ছিল উৎসবের আমেজ। শহরের রাজপথ থেকে শুরু করে অলিগলি— সর্বত্রই দেখা গেল একতার দৃশ্য। পথচারী, ব্যবসায়ী, চাকুরিজীবী থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মানুষ একে অপরের হাতে রাখি বেঁধে দিয়ে বিনিময় করে নিলেন শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা। বিশেষ করে, শহরের ২৪, ২৬, ২৭ এবং ৪৩ নং ওয়ার্ডের মতো বিভিন্ন এলাকায় এই উৎসব এক ভিন্ন মাত্রা পেয়েছিল। শিশু থেকে প্রবীণ, নারী থেকে পুরুষ— সকলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দুর্গাপুরের সামাজিক ঐক্যের এক শক্তিশালী চিত্র তুলে ধরে।
এই দিনের উদযাপনে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেন শহরের পরিচিত সমাজকর্মী শ্রী ভীমসেন মন্ডল। তাঁর সক্রিয় অংশগ্রহণে আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়ে সৌভ্রাতৃত্ব ও একতার বার্তা দেন। তাঁর পাশাপাশি, শহরের আরও অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি এই মহৎ উদ্যোগে সামিল হয়ে উৎসবের আনন্দকে দ্বিগুণ করে তোলেন।
বিভিন্ন ক্লাব ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির আয়োজন শুধুমাত্র রাখি বিনিময়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। ছোটদের জন্য অঙ্কন প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং খেলাধুলার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। পাশাপাশি, প্রবীণ নাগরিকদের সম্মান জানাতে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় মিষ্টি ও নানা উপহার, যা তাঁদের মুখে অমলিন হাসি ফুটিয়ে তোলে।
সব মিলিয়ে, দুর্গাপুর শহর যেন এদিন এক হয়ে উঠেছিল এক রঙিন উৎসবের ক্যানভাসে। ঢাকের বোল, নতুন পোশাকের বাহার আর মানুষের অনাবিল হাসি-ঠাট্টায় শিল্পনগরী এক দিনের জন্য হয়ে উঠেছিল সম্প্রীতির মিলনক্ষেত্র।
এই রাখি বন্ধন উৎসব আরও একবার প্রমাণ করল যে, পারস্পরিক ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাই একটি সমাজের মূল ভিত্তি। দুর্গাপুর শহর দেখিয়ে দিল, ঐক্যের বন্ধন যখন দৃঢ় হয়, তখন সমাজ আরও উজ্জ্বল ও শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন: স্বনির্ভরতার পথে মেয়েদের এগিয়ে নিতে কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উদ্যোগ