Positive বার্তা (বাংলা)

A teamwork initiative of Enthusiastic people using Social Media Platforms

Homeব্লগনিলুফা ইয়াসমিনের অসামান্য সাফল্য: বাংলা এবং সঙ্গীতের যুগলবন্দী

নিলুফা ইয়াসমিনের অসামান্য সাফল্য: বাংলা এবং সঙ্গীতের যুগলবন্দী

Success Through Focus: পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার মেয়ে নিলুফা ইয়াসমিন সম্প্রতি প্রকাশিত ইউজিসি নেট জুন, ২০২৫-এর ফলাফলে বাংলা বিষয়ে সর্বভারতীয় স্তরে প্রথম স্থান অধিকার করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। ১০০ পার্সেন্টাইল নম্বর পেয়ে তিনি শুধু নিজের নয়, তাঁর শিক্ষক, পরিবার এবং পশ্চিমবঙ্গেরও মুখ উজ্জ্বল করেছেন। এই কৃতিত্বের জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। নিলুফা বর্তমানে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে মধ্যযুগের সাহিত্য ও সঙ্গীত নিয়ে পিএইচডি করছেন।

পড়াশোনা ও সঙ্গীতের প্রতি অবিচল নিষ্ঠা

নিলুফার এই সাফল্য একটি প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেছে – “বাংলা নিয়ে পড়ে কী হবে?” তাঁর অসাধারণ ফল প্রমাণ করে দিয়েছে যে, বই এবং সঙ্গীতের চর্চা কখনও বৃথা যায় না। তিনি জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ (জেআরএফ) এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর উভয় বিভাগেই আবেদনের যোগ্যতা অর্জন করেছেন, যা তাঁর কঠোর পরিশ্রম ও মেধার স্বীকৃতি।

নিলুফার জীবনের সাথে সঙ্গীত ওতপ্রোতভাবে জড়িত। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি গান গাইতে এবং শুনতে ভালোবাসেন। এমনকি ইউটিউবেও তাঁর গানের ভিডিও পোস্ট করেন। তাঁর এই অনন্য সমন্বয় তাঁর গবেষণার ক্ষেত্রেও প্রতিফলিত হয়েছে। তিনি বর্তমানে মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে পদাবলী এবং বিভিন্ন জনজাতির সঙ্গীতের প্রভাব নিয়ে গবেষণা করছেন।

সাফল্যের নেপথ্যে অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও অনুপ্রেরণা

নিলুফার এই অভাবনীয় সাফল্যের পেছনে রয়েছে তাঁর অদম্য ইচ্ছাশক্তি। এর আগে দু’বার তিনি জেআরএফ পাওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করলেও, ‘হাল ছেড়ো না বন্ধু’ মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে তিনি তৃতীয় বারে সফল হয়েছেন। পরিবার, বন্ধু-বান্ধব এবং কর্মক্ষেত্রের সহকর্মীরা তাঁকে সব সময় সাহস জুগিয়েছেন, যা এই কঠিন যাত্রায় তাঁর প্রধান পাথেয় ছিল।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক রমেনকুমার সর, যিনি নিলুফার গবেষণার তত্ত্বাবধায়ক, তাঁর সাফল্যে অত্যন্ত আনন্দিত। তিনি জানান যে নিলুফা প্রচণ্ড পরিশ্রমী এবং তাঁর শিক্ষকরা সব সময় তাঁকে উৎসাহ দিয়েছেন। উল্লেখ্য, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে এর আগেও দুই কৃতী ছাত্রী – ছন্দমঞ্জরী চট্টোপাধ্যায় (২০২১) এবং প্রিয়াঙ্কা কুন্ডু (২০২৩) – ইউজিসি নেট জেআরএফ-এ সর্বভারতীয় স্তরে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন। নিলুফা তাঁদের সান্নিধ্য থেকেও কাজ শেখার সুযোগ পেয়েছেন, যা তাঁর নিজের গবেষণায় সহায়ক হয়েছে।

ভবিষ্যতের পথ এবং কিছু চ্যালেঞ্জ

নিলুফার এই সাফল্য রাজ্যের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনুপ্রেরণা। এটি দেখায় যে একাগ্রতা এবং নিষ্ঠা থাকলে যেকোনো লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব। একই সঙ্গে, গণজ্ঞাপন ও সাংবাদিকতায় সর্বভারতীয় স্তরে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করা রিক্তা চক্রবর্তীও রাজ্যের গর্ব বৃদ্ধি করেছেন।

তবে, অধ্যাপক রমেনকুমার সর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর আলোকপাত করেছেন। তিনি মনে করেন যে বাংলা সাহিত্যের গবেষণার ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময় লাইব্রেরির উপর নির্ভর করতে হয়, যা অনেক সময় তথ্যের ঘাটতি এবং পরবর্তীকালে বিতর্কের অবকাশ তৈরি করে। গবেষণার এই সীমাবদ্ধতাগুলি দূর করা প্রয়োজন, যাতে ভবিষ্যতের গবেষকরা আরও নির্ভুল ও প্রাসঙ্গিক তথ্য নিয়ে কাজ করতে পারেন।

নিলুফা ইয়াসমিনের এই সাফল্য কেবল ব্যক্তিগত জয় নয়, এটি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গুরুত্ব এবং সম্ভাবনার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাঁর গানের প্রতি ভালোবাসা এবং সাহিত্যের গভীরে ডুব দেওয়ার প্রবণতা প্রমাণ করে যে, সৃজনশীলতা এবং পাণ্ডিত্য একে অপরের পরিপূরক হতে পারে।

আরও পড়ুন: বিশ্ব ব্যাঘ্র দিবসে ভারতের গর্ব: বিশ্বে বাঘ সংরক্ষণে নেতৃত্ব দিচ্ছে ভারত

Join Our WhatsApp Group For New Update
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

সবচেয়ে জনপ্রিয়