Ayodhya Hills Bans Smoking: পুরুলিয়ার প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খবর। রাজ্যের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র অযোধ্যা পাহাড়ের পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষায় এবার কঠোর পদক্ষেপ নিল বন দফতর। পর্যটকদের ভিড় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পাহাড়ের দূষণ, বিশেষত প্লাস্টিক বর্জ্যের লাগামছাড়া চাপ বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়েই এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অযোধ্যা পাহাড়কে পুরোপুরি ধূমপান-মুক্ত এবং প্লাস্টিক-মুক্ত এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যেই এই নতুন বিধিনিষেধ চালু হতে চলেছে।
পুরুলিয়া বনবিভাগের ডিএফও অঞ্জন গুহের নেতৃত্বে সম্প্রতি এক বৈঠকে বন বিভাগের উচ্চপদস্থ আধিকারিক ও বনকর্মীরা এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেন। বন দফতর সূত্রে জানা গেছে, দীপাবলির ঠিক পর থেকেই এই কড়া নিয়ম কার্যকর হবে। পাহাড়ের মূল দুটি প্রবেশপথ— সিরকাবাদ এবং মাঠা-তে শুরু হবে নাকা চেকিং।
প্লাস্টিক ও ধূমপানে কড়া নিষেধাজ্ঞা
নতুন নিয়ম অনুসারে, কোনো পর্যটক প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ, একবার ব্যবহারযোগ্য প্যাকেজিং বা প্লাস্টিকের জলের বোতল নিয়ে পাহাড়ে উঠতে পারবেন না। চেকিং পয়েন্টেই এই সামগ্রীগুলি জমা রাখতে হবে এবং ফেরার পথে পর্যটকরা তা ফেরত নিতে পারবেন। ডিএফও অঞ্জন গুহ স্পষ্ট জানিয়েছেন, পর্যটকদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা যেমন একদিকে আনন্দের, তেমনই অন্যদিকে প্লাস্টিকের বর্জ্য পরিবেশের ওপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করছে।
প্লাস্টিক বর্জ্যের পাশাপাশি, পাহাড়ের স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখতে ধূমপানও সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাহাড়ের বিভিন্ন স্থানে ‘নো স্মোকিং’ এবং পরিবেশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড স্থাপন করা হবে। কেউ যাতে এই নিয়ম লঙ্ঘন না করে, তার জন্য পাহাড়জুড়ে কড়া নজরদারি চালাবে বন দফতর এবং জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্যরা। নিয়ম ভাঙলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
রাজ্যের অনুমোদনের অপেক্ষায় ‘প্লাস্টিক-মুক্ত’ ঘোষণা
বন দফতরের এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে অযোধ্যা পাহাড়কে প্লাস্টিকমুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণার প্রস্তাব ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষ আশা করছেন, দ্রুতই এই প্রস্তাবে অনুমোদন মিলবে। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর একদিনেই প্রায় এক লক্ষ পর্যটক অযোধ্যা পাহাড়ে ভিড় জমিয়েছিলেন। পর্যটনের এই সাফল্যকে সাধুবাদ জানালেও, পরিবেশের ওপর এর বিরূপ প্রভাব নিয়ে প্রশাসন যথেষ্ট চিন্তিত।
বন দফতর বিশ্বাস করে, এই কঠোর নজরদারি ও নিয়মের ফলেই পাহাড়ের স্বাভাবিক পরিবেশ, অস্তিত্ব ও সৌন্দর্য রক্ষা করা সম্ভব হবে। অযোধ্যা পাহাড়ের পরিবেশকে অক্ষুণ্ণ রাখতে বন দফতরের এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলির জন্য এক মডেল হিসেবে কাজ করবে।
আরও পড়ুন: পুজোর মরসুমে খুশির খবর: বিশ্ববাংলা শারদ সম্মান ২০২৫-এর তালিকা প্রকাশ





