A School Transformed: বাঁকুড়ার ওন্দার পুনিশোলের ভোলা হিরাপুর নেতাজি সুভাষ উচ্চ বিদ্যালয় যেন শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, এটি পুষ্টির এক অফুরন্ত খনি! এই স্কুলের মিড ডে মিল এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে, আর এর পেছনের কারণ হলো স্কুলের নিজস্ব বিশাল সবজি বাগান। নিত্যপ্রয়োজনীয় শাকসবজির দাম যখন আকাশছোঁয়া, তখন এই স্কুল কর্তৃপক্ষ এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, যার সুফল এখন পাচ্ছে পড়ুয়ারা।
২০২৪ সালে যখন শাকসবজি ও আলুর দাম সাধারণ মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছিল, তখন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে এই অভিনব সবজি বাগান তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই উদ্যোগ আজ ফলপ্রসূ। ২০২৫ সালে এসে এই বাগানই স্কুলের মিড ডে মিলের বেশিরভাগ সবজির চাহিদা পূরণ করছে।
এই বাগানে কী নেই! বরবটি, বেগুন, বিনস, টমেটো, ঝিঙে, লাউ, কুমড়ো, পুঁই, গাজর এবং ঢেঁড়স— হরেক রকমের টাটকা সবজি উৎপাদিত হচ্ছে এখানে। শুধু সবজিই নয়, পরিবেশ সচেতনতারও এক সুন্দর উদাহরণ স্থাপন করেছে স্কুলটি। বাগানে লাগানো হয়েছে শাল, সেগুন, বহেড়া, সিঁদুর এবং রুদ্রপলাশের মতো বিভিন্ন গাছ।
এই বিদ্যালয়ের বিশেষত্ব শুধু মিড ডে মিলে সীমাবদ্ধ নয়। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীরাও চাইলে স্কুলের খাবার গ্রহণ করতে পারে। এতে করে নিশ্চিত হচ্ছে যে কোনো ছাত্র বা ছাত্রী অভুক্ত থাকছে না এবং সকলের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হচ্ছে।
ভোলা হিরাপুর নেতাজি সুভাষ উচ্চ বিদ্যালয় ইতিমধ্যেই তাদের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগের জন্য ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। অন্যান্য সরকারি বিদ্যালয়গুলির কাছে এটি একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে যে কীভাবে নিজেদের উদ্যোগে ছাত্র-ছাত্রীদের পুষ্টির মান বজায় রাখা যায়।
প্রধান শিক্ষক তরুণ কুমার চ্যাটার্জী জানিয়েছেন, “ছাত্র-ছাত্রীদের সম্পূর্ণ পুষ্টি প্রদান করার জন্যই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।” একটি বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কাছে শুধু পড়াশোনার জায়গা নয়, এটি তাদের দ্বিতীয় বাড়ি। শিক্ষা, খেলাধুলা, এবং একসঙ্গে বসে খাওয়াদাওয়া— সবকিছু মিলিয়ে বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জীবনে রঙিন স্মৃতি তৈরি করে। আর তাই, সরকারি উদ্যোগে পরিচালিত মিড ডে মিল প্রকল্প সাধারণ মানুষের চোখে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছে, যার এক উজ্জ্বল উদাহরণ এখন বাঁকুড়ার এই স্কুলটি।
এই স্কুলের উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার এবং এটি অন্যান্য বিদ্যালয়গুলিকেও অনুপ্রাণিত করবে বলে আশা করা যায়।